বাঁধাধরা কোনো নিয়ম নেই এই শহরের। একেক লেখক এর রূপরেখা এঁকেছেন একেকভাবে। কারো কাছে এটি যান্ত্রিক শহর—বিষণ্নতার শহর! কারো কাছে আবার মায়ানগরী, যেখানে দেয়ালে দেয়ালে জমে আছে কত-শত স্বপ্ন পূরণের মায়া! দুই-এক গলি পরপর বড় রাস্তা। রাস্তার ব্যাসার্ধ বলে দেয়, এ শহরের বাসিন্দাদের রয়েছে বড় বড় সব গাড়ি। এ গাড়িতে চড়েই আসেন এই যুগের যত রাজপুত্তুরেরা, যাদের অপেক্ষায় থাকেন প্রায় সমবয়সী সুন্দরী রমণীগণ।
সুন্দর হয়ে যখন জন্ম হয়েছে, তখন রূপের প্রদর্শনও চায়! প্রদর্শন করবে কাকে—এটা আবার নির্ভর করে মানসিকতার ওপরই। যদি বেঁধে দেওয়া কোনো ধর্মীয় নিয়ম তাদের রূপ প্রদর্শনের পথে বাধা হয়ে যায়, তবে ধর্মকে শুধু নামের পাশেই দেখা যায়; অনেক ক্ষেত্রে তাও যায় না। রাজপুত্তুরের গাড়িতে করে রমণী চলল রাজবধূ হতে। সত্যিই কি তার রাজবধূ হওয়ার সাধ মেটে, নাকি অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয় পদ্মফুল, যার শিকড় অনেক গভীরে!
সৌন্দর্যে আকৃষ্ট না হয়ে যাবে কোথায়? এ শহরের রূপ তো এমনই! আছে সারি-সারি অট্টালিকার রূপ, আছে পাঁচ বা সাত তারকা হোটেলে বসে মদের গ্লাসে ঢেকুর তোলার রূপ; মখমলি বিছানায় নির্জন রাতের রূপ। ধর্মের আশ্রয়ে ঢিলেঢালা পোশাক পরা মেয়েটিরও রূপ আছে, যেমন আছে খোলসে আবৃত কচ্ছপের কিংবা ঝিনুকের আবরণে মুক্তার রূপ। রূপ আছে রঙিন ওই চার দেওয়ালের—যার মালিক ব্যভিচারী।
রূপ আছে মালিকের দামি ওই পোশাকের, যার বুননকারী শ্রমিকের এ বছরের ঈদে ছোট মেয়েটাকে নতুন জামা কিনে দেওয়া হয়নি। বাবা মালিকের মেয়ের তিন বছর পুরোনো কাপড় এনে দিয়ে বলেছেন, “বেশি দিন পরেনি মা, নতুনই আছে।” পিচঢালা রাস্তায় ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি নিয়ে বের হওয়া সাদা দাড়ির পুরোনো যৌবনেও এক রূপ আছে। এ রূপ সবাইকে মুগ্ধ করে, যখন বড় মসজিদের সামনে গাড়ির ভেতর থেকে একটি নম্র-হাত ইফতারির সামগ্রী চাতক-হাতকে তুলে দেয় এবং চাতক-হাত নম্র-হাতের জন্য দোয়া করে—
“ইয়া মালিক! যে আমার অভাব পূরণ করলো, তুমিও তার অভাব পূরণ করে দাও; নিয়ামত বাড়িয়ে দাও।”
রূপের যে আর কত স্বরূপ, তা দেখাতে শহরের বুকে বেরিয়ে পড়ে এক জড়—যে জড়ের বাবা, ভাই ও স্বামী প্রতি ওয়াক্তের দাইয়ুস!
রূপের সাথে সুখের মেলি খুঁজতে বর্ণের প্রয়োজন হয় না; অনেক ক্ষেত্রে অর্থের প্রয়োজন হয়, আবার অনেক ক্ষেত্রে তাও হয় না। মূলে শুধু নিয়তের তারতম্য, যার অন্তরায় রবের সাথে সেই মূলের সম্পর্ক।
কী দারুণ করে লিখেছো, মাশাআল্লাহ।
জাজাকাল্লাহু খায়রান ভাই।
Keep it up! লেখা চালিয়ে যাও। পড়াশোনার গভীর থেকে নির্যাস আহরণ করো অতঃপর লিখতে থাকো। সফলতা একদিন আসবেই ইনশাআল্লাহ।
ইন শা আল্লাহ্ ভাই। দোয়া করবেন…