৫৫:১৩
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ ١٣
সুতরাং তোমাদের রবের কোন নিয়ামতকে তোমরা উভয়ে অস্বীকার করবে? (উভয়ে দ্বারা জিন ও মানুষকে বুঝানো হয়েছে।)
সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন। এরপর পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন সময় নামের বিশেষ নিয়ামত দিয়ে; যার যথাসাধ্য অপব্যবহারই যেন আমাদের প্রতিদিনের লক্ষ্য। কেন বলছি? আসুন নিজেকে নিয়ে একটু কথা বলি-
আমার বোধশক্তি এসেছে-বড় হয়েছি। অথচ আমি জানিনা সূর্যাস্তের পর থেকে নতুন দিনের সূচনা হয়। জানিনা রাত কখন গভীর হয়। আমি জানিনা ঘুম আল্লাহর একটি নিয়ামত-একটু রাত না জাগলে কি এই যুগের সাথে তাল মেলানো যায়? আমার তো অনেক কাজ-অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করে কাল জমা দিতে হবে, অফিসের কাজ বাঁকি আছে, আগের ম্যাচটা হেরে গেছি; আর একটা খেলি, অনেকদিন আড্ডা হয় না; আজকে একটু সময় পেয়েছি, রাতের শহর অনেক সুন্দর; রাতে বের না হলে কি জমে! তাই আমি ঘুমোতে যাই ৩/৪ টায়, ঘুম গভীরতা পায় ফজরের আযান হলে। আমি উঠি অফিসের সময় হলে, স্কুল বা কলেজে যাওয়ার প্রয়োজন হলে। মাঝেমধ্যে খাওয়ারও খুব একটা সময় পাই না। ক্লাসে কিংবা অফিসের ফাঁকে যোহরের সালাতের ওয়াক্ত হলে আমার সালাত আদায় না করার অনেক ওজর তৈরি হয়ে যায়। বাসায় ফিরতে ফিরতে বিকাল হয়ে যায়Ñক্লান্ত অবস্থায় আছরের সালাত আদায় করতে মন চায় না। সন্ধ্যের দিকে একটু বাহিরে বের হই আড্ডা দিতে; ওহ মাগরিবের কথা তো ভুলেই গেছি! আর রাতের কথা তো বললামই।
এই জীবনধারায় অভ্যস্ত ব্যক্তিকে আপনি যদি প্রশ্ন করেন, “ভাই সালাত আদায় করেছেন?” স্বভাবতই সে উত্তর করে, “ভাই সময় পাই না”।
যদি বিস্তারিত আলোচনা নাইবা করি তবুও কারো কি বুঝতে অসুবিধা হবে যে আমি স্পষ্টই আল্লার দেওয়া বড় একটা নিয়ামতকে তাঁরই ইবাদতে ব্যবহার করছি না? কাল কিয়ামতের জবাবদিহিতায় কি আমার উত্তরটা একই হবে?